আগামী মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের পূর্বেই জেলে তালিকা হালনাগাদ সম্পন্ন করতে হবে
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেছেন, আমাদের জেলেরা বড় ধরনের অপরাধী নয়। তারা ভুল করে নিষিদ্ধ সময়ে (অভিযানের সময়) মাছ ধরে থাকে। অভিযানের সময় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলে কি কি সুবিধা পাবে, তা তাদেরকে ভালোভাবে বুঝাতে হবে। আমরা সবসময়ই জেলেদের স্বার্থে তথা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছি। তবে জাটকা নিধনের সাথে জড়িত দুর্বৃত্ত ও অসাধু জেলেদের বিষয়ে আমরা কঠোর। তাদেরকে যেসব অসাধু মৌসুমী আড়ৎদাররা নদীতে জাটকা নিধনে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, নগদ অর্থ দিয়ে নামায় আমরা তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
গতকাল ২৫ ফেব্রæয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জাটকা রক্ষা কার্যক্রমে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক জেলেদের প্রসঙ্গে বলেন, আগামী অক্টোবর মাসে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের পূর্বেই নতুন করে জেলেদের হালনাগাদ তালিকা সম্পন্ন করতে হবে। সে তালিকায় যেন মৃত জেলে বা পেশা পরিবর্তন করা জেলের নাম না থাকে। যেন জেলেদের বাইরে অন্য কেউ বরাদ্দকৃত চাল না পায়। আমি সবসময়ই প্রকৃত জেলেদের পক্ষে, তবে দুর্বৃত্ত ও অসাধু জেলেদের পক্ষে নই। একজন জেলে ভুল করে অভিযানের সময় যখন নদীতে নামে, তখন তাকে আইনের ব্যবস্থায় আনা হয়। আর একজন জেলে যখন জেল হাজতে যায়, তখন তার পুরো পরিবারই সেই শাস্তি ভোগ করে। তাই তাদের ভালো করে বুঝিয়ে দিতে হবে। যেন অভিযানের সময় নদীতে নামলেই আইনি ব্যবস্থায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, কোনো একটা কাজ করতে প্রথমেই প্রচারণার দরকার পড়ে। সেই প্রচারণার প্রচেষ্টা আগেই করতে হবে। বড় ধরনের কার্যক্রম করতে গেলে পরিকল্পনার দরকার পরে। পর্যালোচনা করে আমরা সে ধরনের একটি অ্যাকশন পরিকল্পনা করবো। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সমন্বিতভাবে এক হয়ে কাজ করতে হবে। অভিযান চলাকালীন সময়ে নদীপথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্পিডবোট ব্যতিত ব্যক্তিগত স্পিডবোর্ট চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে জেলা প্রশাসক বলেন, সদিচ্ছা সবচেয়ে বড় জিনিস। ইচ্ছা থাকতে হবে কাউকে যেনো জাটকা ধরতে না দেয়া হয়। এ কার্যক্রমে আপনাদের সহায়তা অনেক দরকার। জেলেদের সচেতন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন শিকদার, কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি মোঃ আসাদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী, আলগী দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জলিল মাস্টার, জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মালেক দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চাঁদপুর কান্ট্রি ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ্ আলম মল্লিক, চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি বারেক জমাদার বারী, সদর উপজেলা মৎস্যজীবী প্রতিনিধি তছলিম বেপারী প্রমুখ। এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনা করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি হরি, হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপায়ন দাস, মতলব দক্ষিণের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুশরাত শারমিনসহ সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যবৃন্দ।
Post a Comment