কুষ্ঠরোগী কৃষক বিল্লাল ও শতবর্ষী আফিয়া বেগমের পাশে জেলা প্রশাসক
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কুষ্ঠরোগী কৃষক বিল্লাল ও শতবর্ষী আফিয়া বেগমের পাশে মানবতার হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
কুষ্ঠ রোগে দু’পা হারিয়ে এক যুগেরও অধিক সময় কৃষি কাজ করে অতিকষ্টে জীবন অতিবাহিত করে আসছিলেন কৃষক বিল্লাল হোসেন (৬৫)। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও গ্রামের মৃত হাবিবুল্লাহর ছেলে। তার এ দুর্বিষহ জীবনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে গনমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। আর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নজরে আসে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের।
তারই আলোকে গতকাল ১১ ফেব্রæয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিল্লাল হোসেনকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ডেকে আনা হয়। তার সমস্যাগুলো জানার পরে জেলা প্রশাসক কৃষক বিল্লালের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সাংবাদিকদেরকে বলেন, গণমাধ্যমে দেখেছিলাম বিল্লাল হোসেনের সংবাদ। তিনি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। তিনি অনেক কষ্ট করে হালচাষ করছেন এবং ভিক্ষাবৃত্তি করছেন না। এ বিষয়টি আমাদেরকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমি চেয়েছি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য করি। কারণ দেখেছি যারা শারিরীকভাবে সক্ষম তারাও অনেক সময় ভিক্ষাবৃত্তি করছেন। কিন্তু তিনি শারিরীকভাবে অক্ষম হয়েও কৃষি কাজ করছেন। তিনি তার আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেননি। তাকে আমরা মনে করেছি সাহায্য করা দরকার। এ জন্য জন্য সমাজ সেবা থেকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়া হয়েছে। ২৫ হাজার টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, কৃষককে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে হলো যাতে তিনি এ টাকা কাজে লাগতে পারেন এবং আমাদের সিভিল সার্জন ড. মো. সাখাওয়াত উল্যাহ উপস্থিত আছেন। তিনিও তার পায়ের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে কৃষি কাজে সহযোগিতা করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন, চাঁদপুর জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মিয়া ফিরোজ আহমেদ খান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিম।
একই সময়ে প্রায় শতবর্ষী বৃদ্ধা আফিয়া বেগম নামে একজন মহিলাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়। ওই নারী দীর্ঘদিন চাঁদপুর শহরের কোর্ট স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তি করে আসছিলো। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায়। ওই নারীকে ভিক্ষাবৃত্তি না করে নিজ এলাকায় চলে যেতে অনুরোধ করা হয়।
Post a Comment