হাজীগঞ্জে ছোট ভাইকে অপহরণের দায়ে বড় ভাই জেলে

 হাজীগঞ্জে আপন ছোট ভাইকে অপহরণের দায়ে ৮ ফেব্রæয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় বড় ভাইকে আটকের পর জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরপূর্বে চিরকুট লিখে ছোট ভাই রায়হান এহসান রিহান (৫) কে অপহরণ করে বড় ভাই ফাহাদ বিন এহসান তারেক। এ ঘটনায় বড় ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন পিতা আবু তাহের, মামলা নং-৮/২০২১।

হাজীগঞ্জে ছোট ভাইকে অপহরণের দায়ে বড় ভাই জেলে


ছোট ভাই রিহানকে অপহরণকালে বাসায় একটি চিরকুট লিখে যায় তারেক। চিঠিতে তারেক উল্লেখ করে আমি শুধু এ দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমি সেদিন কিডনি বিক্রি করে ছিলাম। ঠিক এদিন থেকে আপনারা আমার অবহেলা করা শুরু করছেন। অথচ আপনাদের অত্যাচারে আমি বাধ্য হয়েছি, নিজের অঙ্গ বিক্রি করতে। আপনারা আমার জীবনের সব শেষ করে দিয়েছেন। আমার স্ত্রী অন্যের বিছানায় সঙ্গী, শুধু আপনাদের জন্য। আমার সন্তানের মুখ পর্যন্ত আমি আজো দেখি নাই। আমার জীবন নষ্ট করে আপনারা শান্তিতে থাকবেন, ভাবলেন কীভাবে। আমি এতোদিন অপেক্ষা করেছি। আপনাদের হাতে সুযোগ থাকা সত্তে¡ও আপনারা আমাকে কোনো ব্যবস্থা করে দেন নাই। আপনার সন্তান যেখানে বেকার, সেখানে আপনারা হিন্দুর সন্তানকে ২০ লক্ষ টাকা দেন ব্যবসা করার জন্য। আপনাদের টাকা পয়সা মানুষের জন্য। এতোদিন কোনো বাচ্চা পেশেন্ট পাই নাই। তাই আপনাদের সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করেছি। আমার মত এবার আপনাদের ছোট ছেলে কিডনি দিবে। আপনারা আমার ব্যবস্থা করেন নাই, তাই এটা ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না। আপনারা আপনাদের টাকা-পয়সা নিয়েই থাকেন। আর মানুষের ছেলেদেরই বড় বানান। আমার কিডনি বিক্রির সময় যেমন কিছু করতে পারেন নাই, এবারো পারবেন না, আপনাদের ছোট ছেলের সময়।

চিঠির সূত্র ধরেই হাজীগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়েরি করেন তারেকের বাবা। পরে কৌশলে তারেককে ৫ লক্ষ টাকা দেয়ার কথা বলে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসলে গোপনে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ মোশারফ হোসেন তারেককে আটক করে।

আটক তারেকের মা ফরিদা সুলতানা শিখা মুঠো ফোনে জানান, আমার বড় ছেলে ছোট ভাইয়ের সাথে এমন করবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।

পুলিশের হাতে আটক তারেক জানায়, আমি আমার কিডনি বিক্রি করে ব্যবসা শুরু করেছি। তবুও আমার গর্ভধারিনী মা আমাকে ব্যবসার জন্য টাকা না দিয়ে আরেকজনকে আমার সামনে ২০ লাখ টাকা ধার দেয় ব্যবসা করার জন্য। আমি স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে আমার মায়ের জন্য আজ পথে পথে হাঁটছি। তারা আমাকে বাধ্য করেছে, এমন ঘটনা ঘটাতে।

তারেক বলেন, আমি আমার ছোট ভাইকে অপহরণ করেছি শুধু মাত্র টাকার জন্য। কিডনি বিক্রয়ের কথাটি চিঠিতে লিখে আমার মা-বাবাকে ভয় দেখিয়ে ছিলাম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ মোশারফ হোসেন জানান, অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে এবং অপহৃত রিহানও আমাদের জিম্মায় রয়েছে। গতকাল ৯ ফেব্রæয়ারি মঙ্গলবার অপহরণকারীকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।